অনলাইন ডেস্ক: জৈব জ্বালানি ব্যবহারে নির্গত বিষাক্ত গ্যাস বায়ুর গুণগত মান নষ্ট করছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তার পাশাপাশি নির্মল বায়ু নিশ্চিত করতে নবায়নযোগ্য শক্তি প্রসারের কোনো বিকল্প নেই।
আজ শনিবার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) সেমিনার কক্ষে 'নির্মল বায়ু এবং জ্বালানি নিরাপত্তায় নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসার' বিষয়ক একটি গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এবং আরবান প্রোগ্রাম, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সহ-আয়োজক ছিল পরিবেশ উদ্যোগ, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ) ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
বৈঠকে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জ্বালানি গবেষণা কেন্দ্রের (সিইআর) পরিচালক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির অপার সম্ভাবনার পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অন্যতম উৎস হিসেবে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎকে সঠিক গবেষণার মাধ্যমে কাজে লাগাতে হবে। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশের মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদন সম্ভব বলে বিশ্বাস করতে হবে। সেই সাথে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কাজ করতে হবে সম্মিলিতভাবে।
ক্যাপস এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, নির্মল বায়ু মানুষের অধিকার। সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ঢাকার বাসিন্দারা। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করা হলে সবার জন্য নির্মল বায়ু এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানির অভাব এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতার ফলে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর সমন্বয়ক শরীফ জামিল।
তিনি বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিকল্প নেই। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ গুলোর মধ্যে ৭০ শতাংশ দায়ী জীবাশ্ম জ্বালানি। এ বিষয়ে সকল পর্যায়ে সচেতন হতে হবে।
ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের উপ-পরিচালক মঞ্জু মারীয়া পালমা বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার এগিয়ে আসা উচিত।
ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস এর নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা ও টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তার পাশাপাশি নির্মল বায়ু নিশ্চিত করতে নবায়নযোগ্য শক্তি প্রসারের বিকল্প নেই। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসতে হবে।
সামুদ্রিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় জ্বালানি নিরাপত্তায় বিশেষ নজর দিতে হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোটের (বিএনসিএ) সদস্য সচিব ও সেভ আওয়ার সি এর মহাসচিব মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক।
তিনি বলেন, প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসার জরুরি। উপকূলীয় এলাকায় কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো আমাদের পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি।
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মাহমুদা ইসলাম বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার শুধু বিদ্যুৎ খাতে নয়, পরিবহনেও এর প্রসার ঘটাতে হবে।
বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পিআইবির পরিচালক (এডমিন) মো. জাকির হোসেন, আর্থ সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মাদ মামুন মিয়া, ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফিক অ্যান্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউট এর মোহন কুমার দাস, বাংলাদেশ প্রাণিবিজ্ঞান সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. গুলশান আরা লতিফা, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদা পারভীন প্রমুখ।
0 coment rios: