মোঃ মাহমুদুল হাসান: আজিজের জীবনযুদ্ধ শুরু হয়েছিল ২৩ বছর আগে। নোয়াখালীর এক ব্যক্তির ব্যবসা ছেড়ে দেওয়ায় তার কাছ থেকে মাত্র ষাট টাকায় একটি লাল বালতি আর একটি মগ কিনে ব্যবসার যাত্রা শুরু হয়েছিল আজিজের। এর পূর্বে আজিজ স্থানীয় বাজারে পিঠা পুলি বিক্রি করেই দিন কাটাতো। ডিমে ভরা ষাট টাকার লাল বালতি আর মগ আজ তার সঙ্গী। এ যেন অতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে তার নিত্য দিনের সাথে।
ডিম পুষ্টিগুণে ভরপুর সুস্বাদু খাবার। যার গুণের শেষ নেই। ডিমের চাহিদাও বেশ। তাই তো আজিজ সারাদিন এলাকায় ঘুরে ঘুরে দেশি হাঁস, মুরগীর ডিম কিনে বাড়িতে সেদ্ধ করে শহরে সিদ্ধ ডিম বিক্রি করে। রাত কিংবা দিন ডিমের চাহিদা একটু বেশিই। কাঁচা থেকে সিদ্ধ ডিমের দাম দ্বিগুণ হলেও চাহিদা বেশি। তাই সিদ্ধ ডিম বিক্রিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে আজিজ।
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মৃত আব্দুল গণির পুত্র আব্দুল আজিজ (৬২) মুক্তাগাছার পৌর এলাকাতে ২৩ বছর ডিম বিক্রয়ের বিষয়টি জানাযায়। শত অভাব নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি এ পেশায় যেন তার মনের প্রশান্তি খোজে পেয়েছেন। গোছিয়েছে সংসারের দৈন্যদশা করিয়েছেন ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া।
ডিম বিক্রেতা আজিজ দৈনিক আমাদের সংবাদ পত্রিকার এ প্রতিনিধিকে বলেন, শুরুতে আমি পিঠা বিক্রি করতাম। ২৩ বছর আগে নোয়াখালীর এক ভাইয়ের কাছ থেকে বালতি আর মগ কিনছিলাম ষাট টাকা দিয়ে। সেই থেকেই আমি শীতের দিন সিদ্ধ ডিম বিক্রি করি। গরমের সময় আসলে হরেক রকমের সরবত বিক্রি করি। মুক্তাগাছা শহরের এমন কোন জায়গা নেই যেখানে আমার পরিচিতি নেই। আমি গ্রামে ঘুরে ঘুরে ডিম কিনি সেগুলো বাড়িতে সিদ্ধ করে দুপুরে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে বিক্রি করি। রাতে ফেরার কোন ঠিক সময় নাই। শীত শেষের দিকে সীজন প্রায় শেষ। গরম আসলেই উলটকম্বল, তুকমা, তাল মাখনা, বেল সুইট সরবত বিক্রি করা শুরু করে দেব।
প্রশ্নের জাবাবে তিনি আরও বলেন, করোনার সময় ব্যবসা করতে পারিনি। আমার কোন জমি জমাও নেই যে চাষাবাদ করবো। বয়সের ভারে বৃদ্ধ হয়ে গেছি ভারী কাজও তো করতে পারিনা। নিরুপায় ছিলাম অনেক অভাব কষ্টে দিন গুলো পারি করছি। তবে এখন আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভালোই আছি ব্যবসাও করছি।
0 coment rios: