উপজেলার ঘাটুরী এলাকার বারিন্দ্র চন্দ্র দাসের পুত্র চিত্তরঞ্জন দাস শৈশবে হারিয়েছে ডান চোখ। এক চোখ অন্ধ থাকলেও নিজের অক্লান্ত চেষ্টা আর পরিশ্রমের মধ্যদিয়ে ধরে রেখেছে পিতার পেশাগত ঐতিহ্য। এ বাঁশ বেতের পন্য ফেরি করে বিক্রি করেই দুই ছেলে এক মেয়েকে লেখাপড়া ও সাংসারিক ব্যয়ভার বহন করে থাকে। বড় ছেলে এসএসসি পাশ করে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় থাকে ও ছোট ছেলে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী দুই বছরের শিশু কন্যা নিয়েই কোন রকমে পার করছে দিন।
কালের বিবর্তনে কুটির শিল্পের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের জায়গা দখল করেছে স্বল্প দামের প্লাস্টিক ও লোহার তৈরি পন্য। এজন্য বাঁশের তৈরি আসবাবপত্রের চাহিদা না থাকায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কুটির শিল্প। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এই শিল্পের কারিগররা।
চিত্তরঞ্জন দাস বলেন, আগে বাঁশ কিনতাম ৫০/৬০ টাকায় এখন কিনতে লাগে ১০০ থেকে ২০০ টাকা। খরচ বাড়ছে কিন্তু বাড়েনি আমাদের জিনিসের দাম। অনেক দাম দর করে বেঁচার পর লাভ হয় ২০/৩০ টাকা। কোন রকমে ব্যবসা ধইরা রাখছি অনেকেই এখন আর এগুলো বানায় না যে যেকাজ পায় তাই করে। রুয়া লাগানোর সময় রোয়া লাগায়, মাটি কাটার সময় মাটি কাটে, অনেকে ভ্যান গাড়ি চালায়, অনেকে আবার ঢাকায় চলে গেছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবন্ধী কার্ড থেকে তিন মাস পরে পরে ২২শ টাকা দেয় আর আমার বাঁশ বেতের কুলা, চালুন বেইচ্চা কোন রকমে সংসার চালাই। শহরে বাসা বাড়ির সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করলেও শহরের মানুষদের তেমন সারা পাইনা কেউ কেউ আসলেও দাম অনেক কম কয়। এগুলা বানাইতে বাঁশ কিনা আর যে সময় লাগে তার দাম পাই না।
বাঁশ-বেতের জিনিসপত্রের চাহিদা কমে যাওয়ায় একদিকে যেমন সংকটে পড়েছেন কারিগররা অপরদিকে মানুষ হারাতে বসেবে প্রাচীন ঐহিত্য। এভাবে প্রাচীন ঐতিহ্যগুলো হারিয়ে গেলে আগামী প্রজন্ম এ শিল্প সম্পর্কে জানতে পারবে না। তাই এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখা হোক এমনটাই প্রত্যাশা ও আশাবাদী সচেতন মহল।
0 coment rios: