জানাযায়, দীর্ঘদিন ধরে এ দেড় কিলোমিটার রাস্তার নাকাল অবস্থায় চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকার সাধারণ মানুষ। রাস্তাটি দিয়ে মুক্তাগাছার সীমান্তবর্তী মধুপুর উপজেলার শোলাকুড়ি, গিলাগাছা, কোনামারি, বন্দেরিয়া, কাটাজানি ও মুক্তাগাছা উপজেলার কামারিয়া, নয়াপাড়া, কালুরঘাট, সোনাকুড়া, বিজয়পুর, চাঁনপুর ও গাবতলী কলেজ, কাটাজানি উচ্চ বিদ্যালয়, কাটাজানি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোছাম্মৎ মালেকা বেগম নূরানী ও হাফেজীয়া মাদ্রাসার শত শত ছাত্র-ছাত্রীর চলাচল করে থাকে। এছাড়াও এসব এলাকাগুলো থেকে উৎপাদিত কলা, লেবু, আনারসসহ বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফসল বাজারজাতকরণ ও চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে এই রাস্তা। প্রতিদিন পিকআপ, রিক্সা, ভ্যান, অটো, ঘোড়ার গাড়ি চলাচল করে। কিন্তু রাস্তার এ বেহাল দশায় উপজেলা শহরের সাথে যোগাযোগ কষ্টের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে রাস্তায় বড় বড় আইর গর্ত ও প্রচন্ড কাদামাটিতে একাকার হয়ে আছে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি ও মোটরসাইকেল আরোহীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শুধু গাড়ি চালক নয়, পথাচারীদের জন্যও দুর্বোধ্য হয়ে উঠেছে এ রাস্তাটি। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় পানি জমে যায়। এমনকি রাস্তাটির কিছু কিছু জায়গা খুবই খারাপ অবস্থা হওয়ায় হেঁটে চলাচল করাই মুশকিল।
৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধ আরফান আলী ও ইয়াদ আলী মন্ডল জানান, দীর্ঘদিনেও আমাদের রাস্তা উন্নয়ন করা হয়নি। গড়ি চলাচল তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলাচল করাই কঠিন।
কৃষক আব্দুল মজিদ, শামিম, শুক্কুর আলী, রেজাউল করিম, আব্দুল্লাহ, চাঁন মিয়া, শিক্ষক মাছুম ও জামাল উদ্দিন জানান, আমরা রাস্তার সমস্যা নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের শরণাপন্ন হলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। আমাদের রাস্তার করুন অবস্থা আমাদের দেখার কেউ নেই। রাস্তার খুবই খারাপ অবস্থা থাকার কারনে স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের চরম কষ্টে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। রাস্তাটি পাকা হলে মাদ্রাসা, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, ও কলেজের শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষের চলাচলের পথ সুগম হবে।
কলেজ শিক্ষার্থী ইব্রাহীম খলিল বলেন, খারাপ রাস্তার কারণে আমরা অনেক সময় রিকশা বা ভ্যানগাড়ি পাই না। এ কারণে স্কুল-কলেজে ক্লাশ করতে কিংবা পরীক্ষা দিতে সময়মতো পৌঁছাতে পারি না।
স্থানীয়রা জানান, রাস্তাটির খুবই খারাপ অবস্থা আমাদের চলাচল করতে খুবই কষ্ট হয়। শুকনার সময় চলাচল করতে পারলেও বৃষ্টি হলেই একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বৃষ্টির ফোটা পড়ার পরেই কাঁদা পানিতে একাকার হয়ে যায়। কাঁদায় চলতে গিয়ে অনেকেই পা পিছলে পড়ে গিয়ে গন্তব্যে যাবার আগেই বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হন। শিক্ষার্থীরা সময়মতো স্কুলে যেতে পারে না। একেবাড়েই চলাচলের অযোগ্য কৃষিপণ্য বাজারে নিতে গেলে রাস্তার কারণে যানবাহন খরচ অনেক বেশী দিতে হয়। গ্রামে অসুস্থ রোগী বা অন্তঃসত্ত্বা নারীদের দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। কাঁচা রাস্তা হওয়ার কারণে অনেক সময় যানবাহনও পাওয়া যায় না। এ রাস্তাটি পাকা করণে কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।
৭নং ঘোগা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শরীফ আহমেদ বলেন, ইতিপূর্বে রাস্তাটি মাটি ফেলে সংস্কার করা হয়েছে। তবে অতিবৃষ্টির ফলে কাঁদামাটির সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। খুব দ্রুততার সাথে সরকারীভাবে রাস্তাটি কাজ করা হবে বলে আশা করছি।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাঃ রফিকুল ইসলাম জানান, রাস্তাটি পাকা করণের জন্য অনুমোদন হয়েছে টেন্ডারের মাধ্যমে অতিসত্ত¡র রাস্তাটির কাজ শুরু করা হবে।
0 coment rios: